শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি ডিএনএ রিপোর্ট প্রস্তুতকারীকে সাক্ষ্য প্রদান সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা এবং সাক্ষ্য আইন: আমাদের করনীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত উত্তরায় কাজী ড্রাইভিং স্কুলের উদ্যোগে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত শেখ রাসেলের ৬১তম জন্মদিন পালনের আহ্বান আ.লীগের ৩ দিনব্যাপী জলবায়ু অর্থায়ন, প্রকল্প ধারণাপত্র ও আর্থিক প্রস্তাবনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত জনগনের সেবায় নিয়োজিত বোয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ক্লাইমেট অ্যাকশন ফোরাম ২০২৪ অনুষ্ঠিত লোভ লালসার ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের কল্যাণে সারাজীবন কাজ করেছি : আলাউদ্দিন নাসিম মুলাদীর বোয়ালিয়া নির্বাসী ইয়াছিন হাওলাদারের পরিবার মেজবাহ উদ্দিন গংদের হয়রানীর শিকার মুলাদীর বোয়ালিয়ার জুলেখা বেগম জমি বিক্রি করে প্রতি পক্ষ জাফর ও আমির কর্তৃক হয়রানির শিকার

আন্দোলনের নামে দুর্বৃত্তপনা করলে ছেড়ে দেবো না

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

আন্দোলনের নামে দুর্বৃত্তপনা করলে কিন্তু ছেড়ে দেবো না, বলে বিএনপিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন ও আইনজীবী মহাসমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আন্দোলন করছে, করুক। আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে দুর্বৃত্তপনা করলে কিন্তু ছেড়ে দেবো না।

তিনি বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। কেউ কারো ধর্মের ওপর আঘাত হানবে না। বাংলাদেশে যাতে এ ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা যত বেশি স্বাবলম্বী হবো, ততবেশি আইনজীবী থেকে শুরু করে সবার জন্য সুযোগ অবারিত করে দিতে পারবো। আসুন সবাই মিলে সেই বাংলাদেশ গঠনে কাজ করি। আপনারা মানুষের পাশে থাকবেন। যেখানেই অন্যায় দেখবেন, অন্যায়কারী যেন সাজা পায় সে জন্য কাজ করবেন।

সরকার প্রধান বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেন কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা না হয়। মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাই। আইনজীবীদের জন্য প্রতিটি জেলায় বিশেষ প্লটের ব্যবস্থা করে দেবো। সাথে সাথে আমার একটি অনুরোধ থাকবে আপনারা সার্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি আপনাদের ফান্ড, যেটা জাতির পিতা করে দিয়েছেন, সেটাতে আমি ৩০ কোটি টাকা দেবো। আপনারাও সাধারণ আইনজীবীরা এতে কন্ট্রিবিউট করবেন।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে আমাকে আগেই গ্রেফতার করেছে। আমি কৃজ্ঞতা জানাই, যখন গ্রেফতার করেছে, আপনারা আইনজীবীরা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রতিনিয়ত একটার পর একটা মামলা দিয়েছে। আমাকে হয়রানি করেছে। আমি কিন্তু টলিনি। নিম্ন আদালতের পাশাপাশি উচ্চ আদালতের আইনজীবীরাও পাশে ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করেছি। দুর্নীতির অভিযোগ এসেছিল, আমি চ্যালেঞ্জ করেছিলাম, দুর্নীতি করতে তো আসিনি। পরে এটা আদালতে মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে।

তিনি বলেন, স্মার্ট জুডিসিয়ারি করার উদ্যোগ হিসেবে ই-জুডিসিয়ারি চালু করেছি। জেলে ভার্চুয়াল কোর্ট বসানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আইনগুলো সংশোধন করে যুগোপযোগী করে দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি একটি দাবি আছে, আইনজীবী ভবন করে দেওয়ার। আর্থিকভাবে যত স্বচ্ছলতা আসবে, ধীরে ধীরে সব জেলায় এটা করে দিতে পারবো। তবে এখানে একটা শর্ত আছে, সেখানে আইনজীবীদের পক্ষ থেকেও ফান্ড থাকতে হবে। আপনারা একটা ফাণ্ড গঠন করেন, সেখান থেকে কিছু দেন আমিও কিছু দিবো।

এসময় ২০১৩-১৪ সালে বিএনপির জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনে দায়ের করা মামলার দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির দাবি জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই বিএনপি ক্ষমতায় এসে আমাদের কত নেতাকে হত্যা করেছে। ২০১৩ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করে আরো ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করেছে। এই অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত, সেই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে, এটাই আমার অনুরোধ। তাদের শাস্তি কেনো দেরি হবে। আগে আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিল, এখন আন্দোলনের সুযোগে সামনে এসেছে। তাদের মামলায় যেন তারা সাজা পায়। এটা আপনাদের কাছে আমার দাবি।

সরকারপ্রধান বলেন, ২০০১ এ বাংলাদেশের গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপি-জামায়াত এসেছিল ক্ষমতায়। তারা দেশের অর্থপাচার করেছে। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের দেশ বানিয়েছে। সারাদেশে বোমা হামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছে। বেঁচে গেছি, এটা ঠিক। কিন্তু তারা দেশে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য করেছে।

তিনি বলেন, খুনিদের জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় বসিয়েছেন। সে সময় আমি দেশে ফিরে আসি। দেখি, ক্ষমতাসীনরা উচ্ছ্বিষ্ট বিলিয়ে কিছু লোকের ভাগ্য উন্নয়ন করেছেন কিন্তু জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। আমি গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে বেড়াই। মানুষের কষ্ট দুর্দশা দেখি। পরে ২১ বছর পর আমরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করি। বিচার বিভাগের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিই।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে জিয়াউর রহমানের সহায়তায় বেঈমান মোস্তাক ক্ষমতা দখল করে। টিকতে পারেনি। আসল চেহারা নিয়ে বেরিয়ে আসে জিয়া। ক্ষমতা দখল করে। ইনডেমনিটি জারি করে আমাদের বিচার থেকে বঞ্চিত করে। নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংস করে। নিজেই দল গঠন করে কারচুপি করে ২/৩ শতাংশ মেজোরিটি দিয়ে সংবিধান ক্ষত-বিক্ষত করে।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজও তিনিই শুরু করেছিলেন। তার জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করেন। বিচার কাজে নারীদের যাওয়ার পথ সুগম করেন জাতির পিতা। তার হাত ধরে আমরা সেটা আরও সহজ করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা সদ্য স্বাধীন দেশে স্বাধীনতার সুফল যেমন মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি সাড়ে সাত কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আত্মনিয়োগ করেন। বাংলাদেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় বিচার বিভাগের দিকেও নজর দিয়েছেন। মাত্র ১০ মাসে একটা সংবিধান উপহার দেন। যেটা বিশ্বের কোনো দেশ দিতে পারে নাই। তিনি আইনের শাসনে বিশ্বাস করতেন। তার হাত দিয়েই বাংলাদেশের বিচার কাঠামোর গোড়াপত্তন। তিনি ৭২ সালে বার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন। ৭৩ সালে তাদের ৪৪ শতাংশ জমি বরাদ্দ দেন এবং আইনজীবীদের জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ফান্ড গঠন করে দিয়ে যান।

তিনি বলেন, জাতির পিতা এদেশের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের লক্ষে ৬ দফা দিয়েছেন। যতবার তিনি এদেশের মানুষের জন্য কথা বলেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, বন্দি হয়েছেন, জেল খেটেছেন। সাজাও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু থেমে যাননি। আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমাদের পথচলা।

মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। আরো বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এ এম আমিন উদ্দিন, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হিরু ও আইন সচিব গোলাম সরওয়ার।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধুর আইনী দর্শন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com